গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ২৫২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পথে গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ২৫২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পথে গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ২৫২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গত শুক্রবার গ্রেপ্তারের পর নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনার চার দিন পর গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হওয়া মামলায় স্থানীয় অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিক-আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীসহ ২৫২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন মৃধা বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজশে পুলিশের সরকারি কাজে বাধা প্রদান, গুরুতর রক্তাক্ত জখমসহ হুমকি প্রদানের অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার তিন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। তাঁদের মধ্যে স্থানীয় অনলাইন পোর্টাল প্রেস নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিক হাসিবুর রহমান এবং অনলাইন ফুড ভ্লগার শওকত মিথুনের নামও রয়েছে
মামলায় আসামি হিসেবে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সহসভাপতি কামরুল হুদা, আইভীর মামাতো ভাই গোলাম সারোয়ার, চঞ্চলসহ ৫২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ২০০ জনকে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ সিটির সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারে নগরের দেওভোগ এলাকার বাড়িতে পুলিশ গেলে তাঁর সমর্থক ও এলাকাবাসী ব্যারিকেড সৃষ্টি করে পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে। সাড়ে ছয় ঘণ্টা নাটকীয়তার পর ভোর ছয়টার দিকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পথে শহরের কালির বাজার এলাকায় গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় হওয়া মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ৮ মে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নারায়ণগঞ্জ সিটির সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারে তাঁর বাড়িতে উপস্থিত হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। আইভীকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তাঁর সমর্থিত লোকজন আইনানুগ গ্রেপ্তারে বাধা প্রদান করেন। তাঁরা বাসার সামনের চারপাশের রাস্তায় ট্রাক দিয়ে বালি ফেলে এবং বাঁশ দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন এবং পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। আইভীর সমর্থক আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন মসজিদের মাইকে ও বিভিন্ন মাধ্যমে আইভীর গ্রেপ্তারের বিষয়ে ঘোষণা দিয়ে স্থানীয় নারী-পুরুষসহ সমর্থকদের জড়ো করেন এবং পুলিশকে আইনানুগ কাজে বাধা প্রদান করেন।
পরদিন ৯ মে ভোর পৌনে ছয়টায় আইভীকে পিকআপভ্যানে উঠিয়ে ডিবি কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হলে তাঁর সমর্থক আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা উত্তেজনাকর স্লোগান, গাড়িবহরে বাধা ও শহরের গলাচিপা এলাকায় গাড়িবহর লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় পুলিশের এসআইসহ তিনজন রক্তাক্ত জখম করেন।
নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় অনলাইন পোর্টাল প্রেস নারায়ণগঞ্জের সম্পাদক ফখরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হাসিবুর রহমান জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি অনলাইন পোর্টাল প্রেস নারায়ণগঞ্জে সাংবাদিকতায় যুক্ত হন। তাঁকে এ ধরনের মামলায় গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা নিন্দনীয়। অবিলম্বে তাঁর মুক্তির দাবি জানান তিনি।
মামলার এজাহারে সাংবাদিককে আসামি করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই দিনের ঘটনায় যাঁরা সম্পৃক্ত ছিলেন, তদন্ত ও প্রমাণের ভিত্তিতে তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।